রবিবার, ০৪ মে ২০২৫, ০৫:৩০ অপরাহ্ন
এম.জাফরান হারুন, নিজস্ব প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: এক অসহায় পরিবার দারিদ্রতার আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা জন্মান্ধ বাউল শিল্পী পরেশ মন্ডলের জীবন সংসার। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের বড়গোপালদি গ্রামের মৃত অমল মন্ডলের বড় ছেলে পরেশ। জন্মের পরই তিনি পৃথিবীর আলো-বাতাস দেখতে পাননি। অনাহারে-অর্ধাহারে চলে তাদের সংসার জীবন।
প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও ছোট বেলা থেকেই গান শুনতে শুনতে হয়ে উঠেছেন বাউল শিল্পী। তিনি বেহালা, ঢোল ও দোতরা বাজিয়ে গান পরিবেশন করে থাকেন। তিনি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গান গেয়েই চালাচ্ছেন সংসার। এছাড়া তিনি পাড়া-মহল্লায়, গ্রামে-গঞ্জে ও হাট-বাজারে গান গেয়ে থাকেন। জন্মান্ধ ওই বাউল শিল্পীর গানে মুগ্ধ হয়ে উপস্থিত লোকজন খুশি হয়ে ১০ ও ২০টাকা যা দেয় তা দিয়েই চলে তাদের সংসার। জন্মান্ধ পরেশ চন্দ্র নিজেই গান গেয়ে ও ঢোল বাজিয়ে দৈনিক ২শ’ ৩’শ’ টাকার মতো উপার্জন করেন। বাড়ি থেকে যাতায়াত খরচ বাদে যা থাকে তা দিয়েই চলে তাদের সংসার।
দশমিনা উপজেলা সদরে কথা হয় পরেশের সাথে। কথার শুরুতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন জন্মান্ধ পরেশ চন্দ্র।
তিনি জানান, পরিবারের আহার জোটাতে এবং সন্তানের লেখা পড়া ও তাদের মুখে হাসি ফোটানোর ইচ্ছা করলে ভিক্ষায় নামা যেত। কিন্তু ভিক্ষা করা তাদের পছন্দ নয়। মাঝে-মধ্যে লোকজন আদর করে তাদেরকে বিভিন্ন স্টেজ প্রোগ্রামে নেন। সেখানে হাজার খানেক টাকা পাওয়া যায়।
তিনি নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানাতে গিয়ে বলেন, তার স্বপ্ন হলো একজন পরিপূর্ণ বাউল শিল্পী হওয়া। কিন্তু আশঙ্কা করছেন তার এই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। কারণ দারিদ্রতার আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা তার পরিবার। তাই তার আশা, জনপ্রিয় কোনও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান যদি তাদের পরিবারের এই করুণ পরিণতির কথা তুলে ধরলে দেশবাসীর কাছ থেকে হয়তো তিনি সহযোগিতা পাবেন। এছাড়া তাদের পরিবারের প্রতি সহযোগিতার হাত নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।####